ইনবাউন্ড মার্কেটিং কি? ইনবাউন্ড মেথডলজি কি?
ই-মেইল মার্কেটিং কি? ইমেইল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
কন্টেন্ট মার্কেটিং কি? কন্টেন্ট মার্কেটিং কেন প্রয়োজন?

ই-মেইল মার্কেটিং কি? ইমেইল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

ই-মেইল মার্কেটিং কি? ইমেইল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

ই-মেইল মার্কেটিং! শব্দটা শুনে কি আপনার মনে হচ্ছে, "আরে বাবা! এটা তো সেই পুরনো দিনের ব্যাপার, এখনো কি এটা চলে নাকি?" যদি এমনটা ভেবে থাকেন, তবে আপনি কিন্তু মারাত্মক ভুল করছেন! ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এই রমরমা যুগেও ই-মেইল মার্কেটিং তার নিজস্ব জায়গা ধরে রেখেছে, বরং বলা ভালো, আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ভাবুন তো, আপনার প্রিয় কোনো ব্র্যান্ডের অফার, নতুন পণ্যের খবর কিংবা দারুণ কোনো ডিসকাউন্ট – সরাসরি আপনার ইনবক্সে চলে আসছে। কেমন লাগে তখন? নিশ্চয়ই ভালো লাগে! এটাই তো ই-মেইল মার্কেটিংয়ের জাদু!

আজ আমরা এই ই-মেইল মার্কেটিংয়ের আদ্যোপান্ত জানবো। বুঝবো, কেন এই ২১ শতকেও এটি এত গুরুত্বপূর্ণ, আর কীভাবে আপনি এটি ব্যবহার করে আপনার ব্যবসা বা ব্র্যান্ডকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। চলুন, শুরু করা যাক!

Table of Contents

কী টেকঅ্যাওয়েস

  • সরাসরি যোগাযোগ: ই-মেইল আপনাকে আপনার গ্রাহকদের সাথে সরাসরি ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ দেয়, যা অন্য কোনো মাধ্যমে এত সহজে সম্ভব নয়।
  • খরচ-কার্যকরী: অন্যান্য মার্কেটিং পদ্ধতির তুলনায় ই-মেইল মার্কেটিং তুলনামূলকভাবে অনেক কম খরচ-সাপেক্ষ।
  • উচ্চ ROI: ই-মেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগের উপর ভালো রিটার্ন (Return on Investment) পাওয়া যায়।
  • ব্যক্তিগতকরণ: গ্রাহকদের পছন্দ, আচরণ এবং অতীতের কেনাকাটার উপর ভিত্তি করে ই-মেইল কন্টেন্ট তৈরি করা যায়।
  • পরিমাপযোগ্যতা: ই-মেইল ক্যাম্পেইনের কার্যকারিতা সহজেই ট্র্যাক ও বিশ্লেষণ করা যায়।

ই-মেইল মার্কেটিং কি?

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ই-মেইল মার্কেটিং হলো ই-মেইলের মাধ্যমে সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে বা বর্তমান গ্রাহকদের কাছে আপনার পণ্য, পরিষেবা বা ব্র্যান্ডের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। এটা কোনো সাধারণ ই-মেইল পাঠানো নয়, বরং সুপরিকল্পিতভাবে গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা, তাদের আগ্রহ ধরে রাখা এবং শেষ পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কোনো কাজ (যেমন: পণ্য কেনা, ওয়েবসাইটে ভিজিট করা) করিয়ে নেওয়ার একটি কৌশল।

ধরুন, আপনি একটি নতুন অনলাইন শপ খুলেছেন। আপনার পণ্য সম্পর্কে মানুষকে জানাতে চান, ডিসকাউন্ট অফার দিতে চান। আপনি কি করবেন? এক এক করে সবাইকে ফোন করবেন? নাকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করবেন? অবশ্যই এই দুটোই করবেন, কিন্তু ই-মেইল মার্কেটিং আপনাকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

ই-মেইল মার্কেটিংয়ের উদ্দেশ্য

ই-মেইল মার্কেটিংয়ের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো:

  • ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি: আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে মানুষকে জানানো এবং তাদের মনে আপনার ব্র্যান্ডের একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করা।
  • বিক্রি বৃদ্ধি: সরাসরি পণ্য বা সেবার প্রচার করে বিক্রি বাড়ানো।
  • গ্রাহক সম্পর্ক তৈরি ও শক্তিশালী করা: গ্রাহকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে তাদের আস্থা অর্জন করা এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তোলা।
  • ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানো: ই-মেইলের মাধ্যমে গ্রাহকদের আপনার ওয়েবসাইট বা ল্যান্ডিং পেজে নিয়ে আসা।
  • গ্রাহকদের পুনরায় সক্রিয় করা: যারা অনেক দিন ধরে আপনার কাছ থেকে কিছু কেনেননি বা আপনার সাথে যোগাযোগ করেননি, তাদের আবার সক্রিয় করে তোলা।

ইমেইল মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এখন প্রশ্ন হলো, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক-এর মতো এতসব আধুনিক প্ল্যাটফর্ম থাকার পরও কেন ই-মেইল মার্কেটিং এখনো এত গুরুত্বপূর্ণ? এর পেছনে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী কারণ রয়েছে, যা একে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তুলেছে।

১. সরাসরি এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ

আপনার গ্রাহকের ইনবক্স হলো তার ব্যক্তিগত জায়গা। আপনি যখন সেখানে একটি ই-মেইল পাঠান, তখন তা সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছায়, কোনো অ্যালগরিদম বা নিউজ ফিডের ছাঁকনির মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। এটা যেন আপনার গ্রাহকের সাথে সরাসরি একান্তে কথা বলার সুযোগ। অন্য কোনো মাধ্যমে এত ব্যক্তিগতভাবে গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

২. উচ্চ ROI (Return on Investment)

ই-মেইল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী দিকগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। গবেষণায় দেখা গেছে, ই-মেইল মার্কেটিংয়ে বিনিয়োগের উপর প্রায় ৪৪০০% পর্যন্ত রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ, আপনি প্রতি ১ ডলার খরচ করে ৪৪ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এটা অন্য যেকোনো মার্কেটিং পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি। কারণ, এর খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম।

৩. মালিকানা আপনার হাতে

ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলোর নিয়মকানুন যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। তাদের অ্যালগরিদম বদলে গেলে আপনার কন্টেন্টের রিচ কমে যেতে পারে, এমনকি আপনার অ্যাকাউন্টও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ই-মেইল লিস্টের মালিকানা সম্পূর্ণ আপনার। আপনি আপনার গ্রাহকদের ই-মেইল ঠিকানা সংগ্রহ করেছেন, তাই তাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম আপনার নিয়ন্ত্রণে।

Enhanced Content Image

৪. ব্যক্তিগতকরণের সুযোগ

ই-মেইল মার্কেটিং আপনাকে গ্রাহকদের পছন্দ, আচরণ এবং অতীতের কেনাকাটার উপর ভিত্তি করে কন্টেন্ট ব্যক্তিগতকরণের দারুণ সুযোগ দেয়। ধরুন, আপনার একজন গ্রাহক শার্ট কিনতে পছন্দ করেন। আপনি তাকে শার্টের নতুন কালেকশন বা ডিসকাউন্ট অফার নিয়ে ই-মেইল পাঠাতে পারেন। এতে গ্রাহকের মনে হবে, আপনি তার পছন্দকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, যা তার কেনাকাটার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।

ব্যক্তিগতকরণের উদাহরণ:

  • নাম ধরে সম্বোধন: "প্রিয় [গ্রাহকের নাম],"
  • পছন্দ অনুযায়ী পণ্য সুপারিশ: গ্রাহকের পূর্ববর্তী ব্রাউজিং বা কেনাকাটার ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে পণ্য প্রদর্শন।
  • বিশেষ অফার: জন্মদিনের শুভেচ্ছা বা বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ ছাড়।

৫. পরিমাপযোগ্যতা

ই-মেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের কার্যকারিতা খুব সহজেই পরিমাপ করা যায়। আপনি জানতে পারবেন, কতজন আপনার ই-মেইল খুলেছেন (Open Rate), কতজন লিংকে ক্লিক করেছেন (Click-Through Rate), কতজন আনসাবস্ক্রাইব করেছেন, এমনকি কতজন আপনার ই-মেইল থেকে পণ্য কিনেছেন। এই ডেটা আপনাকে আপনার ক্যাম্পেইনগুলোকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করে।

৬. গ্রাহক ধরে রাখা এবং আনুগত্য তৈরি

শুধুমাত্র নতুন গ্রাহক তৈরি করাই যথেষ্ট নয়, বর্তমান গ্রাহকদের ধরে রাখা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ই-মেইল মার্কেটিং আপনাকে নিয়মিত আপনার গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের আনুগত্য তৈরি করতে সাহায্য করে। আপনি নতুন পণ্যের খবর, টিপস, কুপন বা এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট পাঠিয়ে তাদের আপনার ব্র্যান্ডের সাথে সংযুক্ত রাখতে পারেন।

৭. খরচ-কার্যকরী

অন্যান্য মার্কেটিং পদ্ধতির (যেমন: টেলিভিশন বিজ্ঞাপন, বিলবোর্ড) তুলনায় ই-মেইল মার্কেটিং অনেক কম খরচ-সাপেক্ষ। একটি ই-মেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মে মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে আপনি হাজার হাজার গ্রাহকের কাছে ই-মেইল পাঠাতে পারেন, যা বিজ্ঞাপনের খরচের তুলনায় অনেক কম।

ই-মেইল মার্কেটিং কীভাবে কাজ করে?

ই-মেইল মার্কেটিংয়ের একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। চলুন, এর ধাপগুলো দেখে নিই:

১. ই-মেইল লিস্ট তৈরি

ই-মেইল মার্কেটিং শুরু করার প্রথম ধাপ হলো আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকদের ই-মেইল ঠিকানা সংগ্রহ করা। একে "ই-মেইল লিস্ট" বা "সাবস্ক্রাইবার লিস্ট" বলা হয়। আপনি আপনার ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রিপশন ফর্ম, পপ-আপ, বা লিড ম্যাগনেট (যেমন: ফ্রি ই-বুক, ওয়েবিনারের আমন্ত্রণ) ব্যবহার করে ই-মেইল ঠিকানা সংগ্রহ করতে পারেন। মনে রাখবেন, গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া ই-মেইল পাঠানো উচিত নয়।

Enhanced Content Image

২. ই-মেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন

ই-মেইল পাঠানোর জন্য আপনার একটি ই-মেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মের (যেমন: Mailchimp, Sendinblue, ActiveCampaign) প্রয়োজন হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো আপনাকে ই-মেইল ডিজাইন করতে, লিস্ট ম্যানেজ করতে, ক্যাম্পেইন সেটআপ করতে এবং ফলাফল ট্র্যাক করতে সাহায্য করে।

৩. ই-মেইল কন্টেন্ট তৈরি

আপনার ই-মেইলের কন্টেন্ট আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল হওয়া উচিত। এটি হতে পারে নতুন পণ্যের ঘোষণা, ডিসকাউন্ট অফার, ব্লগ পোস্টের লিংক, টিপস বা আপনার ব্র্যান্ডের গল্প। কন্টেন্ট এমনভাবে তৈরি করুন যেন গ্রাহক এটি খুলতে এবং পড়তে আগ্রহী হয়।

৪. ই-মেইল পাঠানো

সঠিক সময়ে, সঠিক গ্রাহকের কাছে আপনার ই-মেইল পাঠান। আপনার নির্বাচিত প্ল্যাটফর্ম এই কাজটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে করে দেবে।

৫. ফলাফল বিশ্লেষণ এবং অপ্টিমাইজেশন

ই-মেইল পাঠানোর পর, আপনার ক্যাম্পেইনের ফলাফল বিশ্লেষণ করুন। কোন ই-মেইল ভালো পারফর্ম করেছে, কোনটি করেনি – তা দেখে পরবর্তীতে আপনার কৌশল পরিবর্তন করুন।

ই-মেইল মার্কেটিংয়ের প্রকারভেদ

ই-মেইল মার্কেটিং বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়:

১. নিউজলেটার ই-মেইল

এগুলো সাধারণত নিয়মিতভাবে (সাপ্তাহিক, মাসিক) পাঠানো হয় এবং গ্রাহকদের নতুন ব্লগ পোস্ট, পণ্যের আপডেট, টিপস বা কোম্পানির খবরের সাথে আপডেটেড রাখে।

২. প্রোমোশনাল ই-মেইল

এগুলো নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবার প্রচার, ডিসকাউন্ট অফার বা সীমিত সময়ের ডিলের ঘোষণা দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়।

Enhanced Content Image

৩. ট্রানজ্যাকশনাল ই-মেইল

যখন একজন গ্রাহক আপনার ওয়েবসাইট থেকে কিছু কেনেন বা কোনো অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন, তখন এই ধরনের ই-মেইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাঠানো হয়। যেমন: অর্ডার কনফার্মেশন, শিপিং আপডেট, পাসওয়ার্ড রিসেট।

৪. বিহেভিওরাল ই-মেইল

গ্রাহকের অনলাইন আচরণের উপর ভিত্তি করে এই ই-মেইলগুলো পাঠানো হয়। যেমন: যদি কোনো গ্রাহক আপনার ওয়েবসাইটে একটি পণ্য কার্টে রেখে চলে যান, তবে তাকে রিমাইন্ডার ই-মেইল পাঠানো।

ট্রানজ্যাকশনাল ও বিহেভিওরাল ই-মেইল এর পার্থক্য

বৈশিষ্ট্য ট্রানজ্যাকশনাল ই-মেইল বিহেভিওরাল ই-মেইল
উদ্দেশ্য লেনদেন নিশ্চিত করা, তথ্য প্রদান গ্রাহকের আচরণ পরিবর্তন করা, বিক্রি বাড়ানো
ট্রিগার নির্দিষ্ট লেনদেন (যেমন: কেনাকাটা, রেজিস্ট্রেশন) গ্রাহকের ওয়েবসাইট আচরণ (যেমন: কার্ট ত্যাগ, পেজ ভিজিট)
উদাহরণ অর্ডার কনফার্মেশন, শিপিং নোটিফিকেশন কার্ট রিমাইন্ডার, ব্রাউজ রিমাইন্ডার
ব্যক্তিগতকরণ লেনদেনের তথ্য অনুযায়ী গ্রাহকের আচরণের উপর ভিত্তি করে

ই-মেইল মার্কেটিংয়ের চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান

ই-মেইল মার্কেটিংয়ের অনেক সুবিধা থাকলেও কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

চ্যালেঞ্জ ১: কম ওপেন রেট

অনেক সময় গ্রাহকরা ই-মেইল খোলেন না।
সমাধান: আকর্ষণীয় সাবজেক্ট লাইন ব্যবহার করুন, ব্যক্তিগতকরণ বাড়ান, এবং ই-মেইলের সময়সূচী অপ্টিমাইজ করুন।

চ্যালেঞ্জ ২: স্প্যাম ফোল্ডারে যাওয়া

আপনার ই-মেইল স্প্যাম ফোল্ডারে চলে যেতে পারে, ফলে গ্রাহকরা তা দেখতে পান না।
সমাধান: পরিষ্কার প্রেরকের নাম ব্যবহার করুন, অনুমতির ভিত্তিতে ই-মেইল পাঠান, এবং স্প্যাম ট্রিগার করে এমন শব্দ বা ছবি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

চ্যালেঞ্জ ৩: আনসাবস্ক্রাইব করা

গ্রাহকরা আপনার ই-মেইল লিস্ট থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন।
সমাধান: নিয়মিত মূল্যবান কন্টেন্ট পাঠান, গ্রাহকদের পছন্দকে গুরুত্ব দিন এবং অতিরিক্ত ই-মেইল পাঠানো থেকে বিরত থাকুন।

উপসংহার

ই-মেইল মার্কেটিং কোনো পুরনো দিনের কৌশল নয়, বরং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এক শক্তিশালী এবং অপরিহার্য অংশ। এটি আপনাকে আপনার গ্রাহকদের সাথে সরাসরি, ব্যক্তিগত এবং কার্যকরভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। উচ্চ ROI, ব্যক্তিগতকরণের সুযোগ, এবং পরিমাপযোগ্যতার কারণে এটি যেকোনো ব্যবসা বা ব্র্যান্ডের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ।

আপনার যদি এখনো ই-মেইল মার্কেটিং শুরু করার পরিকল্পনা না থাকে, তবে এখনই সময়! ছোট পরিসরে শুরু করুন, গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করুন এবং দেখুন কীভাবে এটি আপনার ব্যবসাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। মনে রাখবেন, একটি সুচিন্তিত ই-মেইল ক্যাম্পেইন আপনার ব্র্যান্ডের জন্য কেবল বিক্রিই বাড়ায় না, বরং দীর্ঘমেয়াদী গ্রাহক আনুগত্যও তৈরি করে। তাহলে আর দেরি কেন? আজই আপনার ই-মেইল মার্কেটিং যাত্রা শুরু করুন!


সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)

প্রশ্ন ১: ই-মেইল মার্কেটিং কি ছোট ব্যবসার জন্য উপযুক্ত?

উত্তর: অবশ্যই! ই-মেইল মার্কেটিং ছোট ব্যবসার জন্য খুবই কার্যকর। কারণ, এটি তুলনামূলকভাবে কম খরচ-সাপেক্ষ এবং উচ্চ ROI প্রদান করে। ছোট ব্যবসাগুলো তাদের গ্রাহকদের সাথে সরাসরি এবং ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ স্থাপন করে আস্থা ও আনুগত্য তৈরি করতে পারে, যা বড় ব্যবসার জন্য কঠিন হতে পারে।

প্রশ্ন ২: ই-মেইল মার্কেটিং শুরু করতে আমার কী কী প্রয়োজন?

উত্তর: ই-মেইল মার্কেটিং শুরু করার জন্য আপনার প্রধানত দুটি জিনিস প্রয়োজন:
১. একটি ই-মেইল লিস্ট: আপনার সম্ভাব্য গ্রাহকদের ই-মেইল ঠিকানা।
২. একটি ই-মেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম: যেমন Mailchimp, Sendinblue, Constant Contact ইত্যাদি, যা আপনাকে ই-মেইল ডিজাইন করতে, পাঠাতে এবং ফলাফল ট্র্যাক করতে সাহায্য করবে।

প্রশ্ন ৩: আমি কীভাবে আমার ই-মেইল লিস্ট তৈরি করতে পারি?

উত্তর: আপনি বিভিন্ন উপায়ে আপনার ই-মেইল লিস্ট তৈরি করতে পারেন:

  • আপনার ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রিপশন ফর্ম যুক্ত করে।
  • ফ্রি ই-বুক, ওয়েবিনারের আমন্ত্রণ, বা ডিসকাউন্ট কুপনের মতো "লিড ম্যাগনেট" অফার করে।
  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ই-মেইল সাবস্ক্রিপশনের জন্য আহ্বান জানিয়ে।
  • আপনার দোকানে বা ইভেন্টে সাইন-আপ শীট রেখে।

প্রশ্ন ৪: আমার ই-মেইল ক্যাম্পেইনের সাফল্য কীভাবে পরিমাপ করব?

উত্তর: ই-মেইল ক্যাম্পেইনের সাফল্য পরিমাপ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেট্রিক্স রয়েছে:

  • ওপেন রেট (Open Rate): কতজন আপনার ই-মেইল খুলেছেন।
  • ক্লিক-থ্রু রেট (Click-Through Rate – CTR): কতজন আপনার ই-মেইলের লিংকে ক্লিক করেছেন।
  • কনভার্সন রেট (Conversion Rate): কতজন আপনার ই-মেইল থেকে কোনো নির্দিষ্ট কাজ (যেমন: কেনাকাটা, ফর্ম পূরণ) সম্পন্ন করেছেন।
  • আনসাবস্ক্রাইব রেট (Unsubscribe Rate): কতজন আপনার ই-মেইল লিস্ট থেকে বেরিয়ে গেছেন।
  • বাউন্স রেট (Bounce Rate): কতগুলো ই-মেইল ডেলিভারি হতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রশ্ন ৫: কত ঘন ঘন আমার গ্রাহকদের ই-মেইল পাঠানো উচিত?

উত্তর: ই-মেইল পাঠানোর ফ্রিকোয়েন্সি আপনার ব্যবসার ধরন এবং গ্রাহকদের পছন্দের উপর নির্ভর করে। অতিরিক্ত ই-মেইল পাঠালে গ্রাহকরা বিরক্ত হতে পারেন এবং আনসাবস্ক্রাইব করতে পারেন। আবার, খুব কম ই-মেইল পাঠালে তারা আপনাকে ভুলে যেতে পারেন। সাধারণত, সাপ্তাহিক বা পাক্ষিক ই-মেইল পাঠানো একটি ভালো শুরু হতে পারে। আপনি আপনার গ্রাহকদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিয়ে এবং মেট্রিক্স বিশ্লেষণ করে সেরা ফ্রিকোয়েন্সি খুঁজে বের করতে পারেন।

Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *